আসসালামু আলাইকুম,
বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহ্ র রহমতে সবাই ভালো আছেন।
পেপাল হলো একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। পেপাল অনলাইন বিক্রেতাদের জন্য টাকা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে, এছাড়াও অনলাইন ও অন্যান্য বাণিজ্যিক ওয়েবসাইট পেপালের সেবা গ্রহণ করে থাকে।
অনলাইনে টাকা আদান-প্রদান এবং কেনাকাটার বিল পরিশোধ করার জনপ্রিয় মাধ্যম হলো পেপাল। বর্তমানে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার মূলই হচ্ছে পেপাল। কিন্তু আমাদের দেশে অনেকেই জানেন না যে পেপাল কি এবং এর উপকারিতাই বা কি। কারণ বাংলাদেশে পেপাল এখনো পর্যন্ত তাদের সেবা দেয়া শুরু করেনি।
বিশ্বের ২০৩ টি দেশের ৩৬০ মিলিয়নের বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে পেপাল এর। শুধুমাত্র ২০২০ সালের তৃতীয় প্রান্তিকেই ৪ বিলিয়ন লেনদেন সম্পন্ন করেছে পেপাল।
একটি পেপাল একাউন্ট খোলার জন্য কোনো ব্যাঙ্ক একাউন্টের ইলেকট্রনিক ডেবিট কার্ড অথবা ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজন ।
বন্ধুরা আর অপেক্ষা নয়। আমাদের সব অপেক্ষার
অবসান ঘটিয়ে আমাদের এই সোনার বাংলাং আসছে পেপাল। ২৪ অক্টোবর ২০২১ সালে দুপুরে গাজিপুরের
চন্দ্রায় ওয়ালটনের টিভি প্রথমবারের মত হাঙ্গেরিতে রপ্তানি কার্যক্রম উদ্বোধন করার সময়
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন এই বছর ডিসেম্বরে বাংলাদেশে
আসছে পেপাল, হ্যাঁ সেই সোনার হরিণ পেপাল ডিসেম্বরে
ঢাকায় কার্যালয় স্থাপন করে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের যাত্রা শুরু করবে।
এই মুহুর্তে অফিসিয়াল ভাবে বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলা যায়না। তাই পেপাল না আসা পর্যন্ত
অন্য কোনো ধরনের বিকল্প উপায়ে পেপাল একাউন্ট খোলা থেকে বিরত থাকুন। করণ ভুয়া এড্রেসের কারণে আপনার একাউন্ট ব্যান হয়ে যেতে পারে, যার ফলে আপনি আপনার আয় করা টাকাতো হারাবেনই, সেই সাথে সাথে
আপনার নামে আর কোনোদিন পেপাল একাউন্ট খুলতে পারবেন না।
পেপাল এখনও আমাদের দেশকে দরিদ্র দেশ হিসেবেই জানে তবে ফ্রিল্যান্সিং
এ অসাধারন সাফল্য এবং মেধাবীদের কঠোর পরিশ্রম তাদের মাথায় বাংলাদেশের ব্যপারে আগ্রহ
নাড়া দিয়েছে এবং উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ বাংলাদেশে পেপাল আনার ব্যাবস্থা
করেছেন।
বাংলাদেশের মানুষদের অনলাইনে আয় করার চাহিদা আস্তে আস্তে বাড়ছে এবং মানুষ এখন প্রচন্ড আগ্রহ প্রকাশ করছে। এদেশের মানুষের অনেকেই
ফ্রিল্যান্সিং ও অনলাইনে কাজ করেন।
পেপাল একাউন্ট খুলতে যা
যা প্রয়োজন:
একাউন্ট খুলতে যা যা প্রয়োজন তার ভেতর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো ইন্টারনেট সংযোগ। এটি মূলত ইন্টারনেট ভিত্তিক লেনদেন ব্যবস্থা। তাই ইন্টারনেট সংযোগ থাকা প্রয়োজন। এছাড়াও যা যা প্রয়োজন তা হলো-
2. National
ID Card
3. Active Mobile
Number
4. Email
Address
5.
Credit/Debit Card or Bank Account
চলুন জেনে নেই পেপাল এর সুবিধা ও অসুবিধাগুলো-
সুবিধা:
* পেমেন্ট এর ক্ষেত্রে সুরক্ষা প্রদান করে পেপাল। এছাড়াও পেপাল পারচেজ প্রোটেকশন প্রতিটি ট্রানজেকশনে সুরক্ষা প্রদান করে। অর্থাৎ যেকোনো ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে পেপ্যাল আপনাকে রিফান্ড বা অন্য যেকোনো উপায়ে সাহায্য করবে।
* পেমেন্ট সার্ভিস হিসেবে পেপাল কতটা বিশাল, তা এর ২০৩টি দেশে চালানো কার্যক্রম দেখলেই ধারণা করা যায়। যেকোনো দেশে পেপাল ব্যবহার করে কারেন্সি কনভার্ট না করেই পেমেন্ট করা যায়।
* পেপাল ব্যবহার করে পেমেন্ট করতে ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার টাইপ করতে হয়না। শুধুমাত্র স্মার্টফোন ব্যবহার করে যেকোনো ধরনের লেনদেন করা যায়। তাই পেপাল ব্যবহার করে পেমেন্ট করা অনেক সহজ প্রক্রিয়া।
* ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে রিওয়ার্ড প্রদান করে পেপাল। পেপাল এর মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের রিওয়ার্ড ও অফার পাওয়া যায়।
* ব্যাংক একাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড যুক্ত করা যায় পেপাল অ্যাকাউন্টে। এর ফলে পেপাল থেকেই সব লেনদেন করা যায়। এছাড়াও বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই পেপাল পেমেন্ট সাপোর্ট রয়েছে, যার ফলে পেপালকে একটি ইউনিভার্সাল ওয়ালেট বলা চলে।
অসুবিধা:
সুবিধার পাশাপাশি সকল জিনিসের অসুবিধাও থাকে। পেপাল ও তার ব্যতিক্রম নয়। চলুন জেনে নেই পেপাল এর কিছু অসুবিধা।
* ইন্সট্যান্টলি পেপাল থেকে ব্যাংক একাউন্টে টাকা ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে ১% চার্জ দিতে হয়। আবার বিনামূল্যে ব্যাংক ট্রান্সফার করা গেলেও এতে বেশ কিছুদিন সময় লাগে।
* একাউন্ট ফ্রিজ করার ক্ষেত্রে পেপাল এর নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। একবার আপনার পেপাল একাউন্ট ফ্রিজ হয়ে গেলে, নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া পর্যন্ত আপনার পেপাল অ্যাকাউন্ট এ থাকা অর্থ আপনি পাবেন না।
বাংলাদেশে পেপাল চালু হলে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে:
এই বছর ডিসেম্বর মাসে চালু হতে যাচ্ছে পেপাল। পেপাল দিয়ে বর্তমানে পেমেন্ট করা, কাউকে টাকা পাঠানো, টাকা গ্রহণ করা, কোনো কিছু ক্রয় করা হয়। বাংলাদেশ বাইরের দেশে সরাসরি পেমেন্ট করতে বা পেমেন্ট দেশে আনতে পারতো না। অন্য দেশের উপর নির্ভর করতে হয়। বাংলাদেশে পেপাল চালু হলে কম সময়ে টাকা দেশে আসবে। অন্যান্য দেশে সহজে পেমেন্ট করা যাবে। দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো পেপালের মাধ্যমে পেমেন্ট রিসিভ করতে পারবে। ফলে বাহিরের দেশে পণ্য পাঠানো ও পণ্য আনা অধিকতর সহজ হবে। ফ্রিল্যান্সাররাও সরাসরি টাকা দেশে আনতে পারবে।
বাংলাদেশে
পেপাল চালু হলে কি কি অসুবিধা হবে:
পেপাল চালু হলে অনেক সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও হবে। এই পেমেন্ট সিস্টেম চালু হলে দেশের মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম যেমন – বিকাশ, নগদ, রকেট ইত্যাদি খাতে ক্ষতি হতে পারে। এসবের ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে।
তবে পেপাল
দেশে এটি নতুন মাত্রা যোগ করবে যাতে টাকা লেনদেন খুব সহজ হয়ে যাবে। বাইরের দেশের সাথে সহজে লেনদেন করা যাবে।
পোস্টটি সময় নিয়ে পড়ার জন্য আপনাদের
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমার এই সাইটে সবসময় visit করুন।
বন্ধুরা আজ এ পর্যন্ত।
সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
0 Comments