আসসালামু আলাইকুম,
বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহ্ র রহমতে সবাই ভালো আছেন।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সাথে এমন কয়েক পদের মজাদার ভর্তার রেসেপি শেয়ার করতে চাই যা একেবারেই আনকমন। এই ভর্তাগুলো তৈরি করা খুবই যতটা সহজ ততটাই মজাদার। বন্ধুরা আজ যে ভর্তাগুলো তৈরি করার
নিয়ম আপনাদের বলতে যাচ্ছি তা আমি প্রায়ই বানিয়ে খাই এবং এই ভর্তাগুলো খেতে আমি খুবই
পছন্দ করি। আমার কাছে এগুলো খেতে মজাদার তাই ভাবলাম আজ আপনাদের সাথেও শেয়ার করি।
হয়ত আপনারা এই ভর্তাগুলো বানিয়ে খেয়ে থাকেন। তবে আমার বানানোর
নিয়ম আজ আপনাদের কছে শেয়ার করলাম। আর এতে কোনো বাড়তি উপকরণ নেই। কারণ অনেক অনেক উপকরণ
দিয়ে বানানো ভর্তা খেতে আমার কাছে খেতে ভালো লাগে না।
বন্ধুরা আপনাদের কাছে অনুরোধ এই লেখাটি খুব মনোযোগ
দিয়ে পড়বেন। আর একবার হলেও এই নিয়মে ভর্তাগুলো তৈরি করে খেয়ে দেখুন বেশি বেশি উপকরন দিয়ে তৈরি ভর্তার চেয়ে এটা খেতে অনেক মজাদার।
আরো পরুনঃ
- বিলুপ্তপ্রায় কটকটি ও বাদাম বাহার এর অসাধারণ ও মজাদার রেসিপি। একবার খেলে বারবার খেতে ইচ্ছে করবে।।
- যে ভাবে রান্না করলে স্টিক নুডুলসও কার্ল নুডুলসের মত সুস্বাদু, ঝরঝরে ও মজাদার হবে। জেনে নিন গোপন ট্রিক্স।
- এই গরমে প্রশান্তি দিতে নানা পদের ঠান্ডা ঠান্ডা শরবতের রেসেপি।
তো চলুন বন্ধুরা বেশি বক বক না করে
মূল আলোচনা শুরু করি।
🔵 চিংড়ি ভর্তা:
উপরকণ:
চিংড়ি (মাঝারি সাইজের) = ২০০ গ্রাম
পেঁয়াজ = ১টি (মাজারি সাইজের),
রসুন = ১টি (মাঝারি সাইজের),
হলুদ গুড়া = সামান্য (চিংড়ি সেদ্ধ করার জন্য),
শুকনো মরিচ টালা = ৬/৭ টি (বা ইচ্ছামতো),
লবণ =
স্বাদ মত,
প্রস্তুতপ্রণালি:
প্রথমে চিংড়িগুলো ভালো করে বেছে পানি দিয়ে পরিষ্কার
করে ধুয়ে ফেলুন কিন্তু খোসা ছাড়াবেন না বা ছিলাবেন না। এবার সামান্য হলুদ গুড়া ও লবণ দিয়ে চিংড়িগুলো
পানি দিয়ে
ভালোকরে সেদ্ধ করে নিন। এবার লবণ বাদে সিদ্ধ করা চিংড়ি ও বাকি সব উপকরণ একসাথে পাটায় মিহি করে ভালোভাবে বেটে নিন। এবার এতে স্বাদ অনুযায়ী লবণ মাখিয়ে নিন। এখন সাজিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার চিংড়ি ভর্তা। বন্ধুরা একবার হলেও এই মজার ভর্তাটা খেয়ে দেখুন এটা কতটা মজাদার।
🔵 নারকেল
দিয়ে কাঁচকলার খোসা ভর্তা:
উপরকণ:
কাঁচকলার খোসা = ৫-৬ টি কাঁচকলার,
নারকেল মিহি বাটা = ১ টি (মাঝারি সাইজের নারকেল পুরোটা),
পেঁয়াজ = ১টি (মাঝারি সাইজের),
রসুন = ১টি (মাঝারি সাইজের),
শুকনো মরিচ টালা = ৮/১০টি (বা ইচ্ছামতো),
লবণ = স্বাদ মত,
প্রস্তুতপ্রণালি:
প্রথমে কাঁচকলার খোসা পানি ভালোভাবে দিয়ে সেদ্ধ করুন। এবার লবন বাদে সিদ্ধ কাঁচকলার খোসা, নারকেল ও বাকি সব উপকরণ একসাথে পাটায় মিহি করে বেটে নিন। এবার এতে স্বাদ অনুযায়ী লবণ মাখিয়ে নিন। এখন সাজিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার নারকেল দিয়ে স্পেশাল কাঁচকলার খোসা ভর্তা। বন্ধুরা একবার হলেও এই মজার ভর্তাটা খেয়ে দেখুন এটা কতটা মজাদার।
🔵 নারিকেল ভর্তা:
উপরকণ:
নারকেল কোড়ানো = ৪ কাপ
পেঁয়াজ = ১টি (মাঝারি সাইজের),
রসুন = ১টি (মাঝারি সাইজের),
শুকনো মরিচ টালা = ৫/৬ টি (বা ইচ্ছামতো),
লবণ = স্বাদ মত,
প্রস্তুতপ্রণালি:
প্রথমে নারকেল মিহি করে পাটায় বেটে নিন। এবার এই নারকেল বাটার সাথে সব উপকরণ মিশিয়ে আবার পাটায় বাটুন। এবার গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন এবং খেয়ে দেখুন এটা
কতটা মজাদার।
🔵 চিংড়ি দিয়ে বেগুন ভর্তা:
উপকরণ:
বড় বেগুন = ৪ টি,
চিংড়ি = ২০-২৫ টি (মাঝারি সাইজের),
হলুদ গুড়া = সামান্য (চিংড়ি সেদ্ধ করার জন্য),
পেঁয়াজ কুঁচি = আধা কাপ,
রাধুনী সরিষার তেল = ২ টেবিল চামচ,
শুকনোমরিচ টালা = ৬/৭ টি (বা ইচ্ছামতো),
লবণ = স্বাদমতো।
প্রস্তুতপ্রণালি:
প্রথমে বেগুনগুলো পানি দিয়ে ভালোকরে সেদ্ধ করে নিন। সামান্য লবণ ও হলুদ গুড়া দিয়ে অল্প পানিতে চিংড়িগুলোও সেদ্ধ করে নিন। এবার লবন বাদে সেদ্ধ বেগুন, সেদ্ধ চিংড়ি ও বাকি সব উপকরণ একসাথে পাটায় মিহি করে বেটে নিন। এবার এতে স্বাদ অনুযায়ী লবণ মাখিয়ে নিন। এবার আসি সরিষার তেলের
ব্যাপারে। অনেকেই এই পাটায় বাটা বেগুন ভর্তায় সরিষার তেল দিয়ে থাকেন কিন্তু আমি এই
পাটায় বাটা বেগুন ভর্তায় সরিষার তেল দেইনা। কারণ তেল বাদে এই ভর্তাটা আমার কাছে খেতে
খুবই মজাদার। তবে হাতে বানানো বেগুন ভর্তায় অবশ্যই সরিষার তেল ব্যবহার করবেন। এখন সাজিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার চিংড়ি দিয়ে বেগুন ভর্তা ।
আরো পরুনঃ
- তালের কেক ও পুডিং সহ অসাধারণ ও মজাদার সব তালের রেসিপি। না খেলে সম্পূর্ণ মিস করবেন।।
- বাড়িতে বসেই তৈরি করুন সুস্বাদু ও মজাদার প্লেইন কেক।
- ঘরে বসেই বানিয়ে ফেলুন রসে ভেজা তুলতুলে রসগোল্লা।
🔵 চিংড়ি দিয়ে লাউশাক ভর্তা:
উপকরণ:
লাউপাতা = ১০-১৫ টি,
চিংড়ি = ২০-৩০টি (মাজারি সাইজের),
পেঁয়াজ = ১টি (মাজারি সাইজের),
রসুন = ১টি (মাজারি সাইজের),
হলুদ গুড়া = সামান্য (চিংড়ি সেদ্ধ করার জন্য),
শুকনো মরিচ টালা = ৫/৬ টি (বা ইচ্ছামতো),
লবণ = স্বাদ মত,
প্রস্তুতপ্রণালি:
প্রথমে লাউশাক পানি দিয়ে ভালোকরে সেদ্ধ করে নিন। সামান্য লবণ ও হলুদ গুড়া দিয়ে অল্প পানিতে চিংড়িগুলোও সেদ্ধ করে নিন। এবার লবন বাদে সিদ্ধ লাউশাক, চিংড়ি ও বাকি সব উপকরণ একসাথে পাটায় মিহি করে বেটে নিন। এবার এতে স্বাদ অনুযায়ী লবণ মাখিয়ে নিন। এখন সাজিয়ে পরিবেশন করুন চিংড়ি দিয়ে মজাদার লাউশাক ভর্তা।
🔵 মসুর ডালের ভর্তা:
উপকরণ:
সিদ্ধ মসুর ডাল = ৫ কাপ,
পেঁয়াজ = ১টি (মাঝারি সাইজের),
রসুন = ১টি (মাঝারি সাইজের),
হলুদ গুড়া = সামান্য (চিংড়ি সেদ্ধ করার জন্য),
শুকনো মরিচ টালা = ৫/৬ টি (বা ইচ্ছামতো),
লবণ = স্বাদ মত,
প্রস্তুতপ্রণালি:
পরিমাণ মতো পানি দিয়ে এমনভাবে ডাল সিদ্ধ করে নিতে হবে যেন বাড়তি পানি না থাকে একেবারে শুকনো থাকে। এবার লবন বাদে সিদ্ধ করা ডাল ও বাকি সব উপকরণ একসাথে পাটায় মিহি করে বেটে নিন। এবার এতে স্বাদ অনুযায়ী লবণ মাখিয়ে নিন। এখন সাজিয়ে পরিবেশন করুন এই মজাদার ভর্তাটি এবং খেয়ে দেখুন এটাও
কতটা মজাদার।
🔵 চিংড়ি
দিয়ে পটলের খোসা ভর্তা:
উপকরণ:
পটলের খোসা = ২ কাপ
নারকেল মিহি বাটা = ১ টি নারকেলে অর্ধেক,
চিংড়ি = ২০-২৫ টি (মাঝারি সাইজের),
পেঁয়াজ = ১টি (মাঝারি সাইজের),
রসুন = ১টি (মাঝারি সাইজের),
হলুদ গুড়া = সামান্য (চিংড়ি সেদ্ধ করার জন্য),
শুকনো মরিচ টালা = ৫/৬ টি (বা ইচ্ছামতো),
লবন = স্বাদমত
প্রস্তুতপ্রণালি:
প্রথমে সামান্য পানি দিয়ে পটলের খোসা ভালোকরে সেদ্ধ করে নিন। সামান্য লবণ ও হলুদগুড়া দিয়ে অল্প পানিতে চিংড়ি সেদ্ধ করে নিন। এবার লবন বাদে সেদ্ধ পটলের খোসা, সেদ্ধ চিংড়ি ও বাকি সব উপকরণ একসাথে পাটায় মিহি করে বেটে নিন। এবার এতে স্বাদ অনুযায়ী লবণ মাখিয়ে নিন। এখন সাজিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার পটলের খোসা ভর্তা । এবার গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।
🔵 শুকনো
মরিচ দিয়ে আলু ভর্তা:
উপকরণ:
আলু (মাঝারি সাইজের) = ৪-৫ টি
শুকনো মরিচ টালা = ৭/৮ টি (বা ইচ্ছামতো),
পেঁয়াজ কুঁচি = ১টি (মাঝারি সাইজের),
রাধুনী সরিষার তেল = আপনার স্বাদমত,
লবন = স্বাদমত
প্রস্তুতপ্রণালি:
প্রথমে পানি দিয়ে আলুগুলো খোসাসহ ভালোকরে সেদ্ধ করে নিন। বন্ধুরা, এখানে একটি কথা
বলি হয়ত আপনারা অনেকেই জানেন না। আপনারা সেদ্ধ আলুগুলো গরম থাকতেই খোসা ছাড়িয়ে একেবারে
মিহি করে চটকে নিবেন (এমন ভাবে চটকাবেন যাতে দলা দলা না থাকে)। কারণ সেদ্ধ আলু ঠান্ডা
হয়ে গেলে এই আলু দিয়ে বানানো ভর্তা খেতে সুস্বাদু হয়না। তাই আলু গরম থাকতেই ভর্তা বানাবেন।
আর একটি কথা। শুকনো মরিচ ও পেয়াজ মাখানোর ব্যাপারে। এখানে আপনারা প্রথমে পরিমানমত
লবণ দিয়ে শুকনো মরিচগুলো চটকে বা ডলে নিবেন। এরপর এতে পিয়াজটা খুব ভালো করে ডলবেন বা
মাখাবেন। খুব ভালো করে মাখাবেন যাতে মরিচ পিয়াজের পানিতে সম্পূর্ণ ভিজে যায় এবং মাখামাখা
হয়। কারণ এই নিয়মে ভর্তা বানালে ভর্তাটা মরিচের রঙে লাল হয়ে যায় এবং খেতে খুব মজাদার
হয়। এবার চটকানো আলুর সাথে মাখানো পেয়াজ-মরিচ ও সরিষার তেল ভালোভাবে মাখিয়ে নিন এবং
খুবই সুন্দর ও মজাদার একটি আলু ভর্তা তৈরি করুন। আর খেয়ে দেখুন এটা খেতে কতইনা মজাদার।
এবার আপনার বানানো ভর্তা গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।
বন্ধুরা আপনাদের কাছে আমার আবারো অনুরোধ আপনারা এই নিয়মে
ভর্তাগুলো তৈরি করে আপনি খান এবং আপনার পরিবারের সবাইকে খাওয়ান। এবং আমাকে কমেন্ট করে
জানাবেন খেতে কেমন লাগলো।
আজ এ পর্যন্ত। পরবর্তিতে আবার কোনো মজাদার রেসেপি নিয়ে হাজির হব আপনাদের সামনে।
সেই পর্যন্ত সবাই ভালো, সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ
3 Comments
আপনার পোস্ট টি পড়ে খুব ভাল লাগলো ভাই । টেকনিক্যাল এস ই ও( Technical SEO ) বাংলা গাইডলাইন 2022
ReplyDeleteMany many thanks.
DeleteAPNAR GMAIL DAN BOLSI
ReplyDeleteGMAIL A KOTHA BOLI COMMENT E SOB KOTHA BOLA JAY